ফেনী জেনারেল হাসপাতালে আধুনিক স্বাস্থ্যসেবায় যত প্রচেষ্ঠা তত্বাবধায়ক ডাঃ আবুল খায়ের মিয়াজির
ফেনী প্রতিনিধি
স্বাস্থ্যসেবায় নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে ফেনীর ২৫০ শয্যার আধুনিক জেনারেল হাসপাতাল সদর হাসপাতাল। অত্যাধুনিক সরঞ্জাম,আধুনিক যন্ত্রপাতি, পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ রয়েছে হাসপাতালটিতে। একসময়ে হাসপাতালে নানা সংকটের নামে খ্যাত এ হাসপাতালে বর্তমান সময়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ধনী-দরিদ্র থেকে শুরু করে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। যদিও এখনো পর্যন্ত হাসপাতালের পুরোপুরি সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি, তবে খুব শীঘ্রই এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ফেনী জেনারেল হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবায় নতুন দিগন্তের সূচনাকারী ব্যক্তিত্ব তত্বাবধায়ক ডাঃ আবুল খায়ের মিয়াজির। এছাড়া সকাল বিকাল পর্যায়ক্রমে পরিচ্ছন্নকর্মীরা হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে শুরু করে ক্যাম্পাসের প্রতিটি রাস্তা ঝাড় দিয়ে পরিপাটি করে রাখেন।
জানতে চাইলে তত্বাবধায়ক ডাঃ আবুল খায়ের মিয়াজি জানান,অল্প সময়ের মধ্যে সকল ওয়ার্ডে ইনচার্জদের হাতে ৩০টির বেশী মোবাইল ফোন দেওয়া হয়েছে,ও মাইকের বেবস্থা করা হবে।যেন এক জায়গা থেকে কথা বললে পুরো হাসপাতালে কথা শুনা যায়, তিনি আরো জানান,ইতিমধ্যেই হাসপাতালে ভর্তি ও আউটডোর কোন রুগীদেরকে বাহির থেকে আর ওষুধ কিনা লাগবেনা। রোগীদের সেবা পেতে যা করার দরকার বেবস্থা হাসপাতালে করা হয়েছে। তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন, তাহলে ফেনী সদর হাসপাতালকে একটি মডেল হাসপাতালে পরিনিত করা যাবে।
আজ থেকে কয়েক বছর আগে সদর হাসপাতালে আসা ব্যক্তি যদি এখন ফেনী এই জেনারেল হাসপাতাল আসেন, তাহলে মুহূর্তেই পরিচ্ছন্নতার পার্থক্যটি বুঝতে পারবেন। হাসপাতালের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে সেবা বৃদ্ধির মানও। হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা কর্মচারীর ভালো ব্যবহারও প্রথম সাক্ষাতেই আপনার নজর কাড়বে। অপারেশনের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহ করা আছে। প্রতিটি ওয়ার্ডকে আলাদা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডাক্তার ও রোগীদের মাঝে গোপনীয়তা রক্ষার জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। হাসপাতালে রোগী কল্যাণ পরিষদ রয়েছে। এ পরিষদের মাধ্যমে গরিব রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। চিকিৎসাসেবার মান বৃদ্ধি করতে সব ওয়ার্ডের নামকরণ করা হয়েছে। সকল স্টাফদের আইডি কাড চালু করা হয়। তত্বাবধায়ক ডাঃ আবুল খায়ের মিয়াজির
এইদিকে অল্প সময়ের মধ্যে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আধুনিকায়নের যে প্রচেষ্ঠা করেছেন তা দৃশ্যমান ও পরিলক্ষিত হয়েছে। তিনি হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। সাধারণ রোগী থেকে শুরু করে সকল পেশার মানুষের কাছে তিনি এক জনহিতৈষী মানুষ হিসেবে পরিচয় লাভ করেছেন। হাসপাতালের সকল ডাক্তার, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর কাছে তার বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে।এ
করোনা মহামারিতে জেলার ৬ টি উপজেলার অন্তরগত প্রায় ১৮ লক্ষ নাগরিকদের স্বাস্থ্য সেবা সুনিশ্চিত করতে সাবেক জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন’র পর শক্ত হাতে হাল ধরেছেন এ মহান সাহসী যোদ্ধা ফেনী সদর হাসপাতাল’র তত্বাবধায়ক ডাঃ আবুল খায়ের মিয়াজি। হাসপাতাল’র চিকিৎসা সেবা কে আরো সম্মৃদ্ধশালী করতে সাপ্তাহিক সভায় গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা প্রদান করেন তত্বাবধায়ক।
ফেনী সদর হাসপাতাল’র চিকিৎসা সেবার মান বৃদ্ধি সহ স্ব-স্ব বিভাগ’র ইনচার্জ’দের কে আরো আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে জেলা সদর হাসপাতাল’র তত্বাবধায়ক ডাঃ আবুল খায়ের মিয়াজি আহব্বান জানান। এ সময় তিনি, হাসপাতাল’র চিকিৎসা সেবাকে আরো সম্মৃদ্ধশালী করতে সাপ্তাহিক সভায় গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা আগামী সাপ্তাহিক সভায় থেকে বিভাগ পর্যায়ের আলোচনা করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। বিভাগ সমুহ নিম্নরুপঃ-
১. সার্জারী বিভাগ, ২. মেডিসিন বিভাগ, ৩, গাইনী বিভাগ, ৪. অর্থো- সার্জারী বিভাগ, ৫, শিশু বিভাগ, ৬, ডায়রিয়া ওয়ার্ড, ৭. ই এন টি বিভাগ, ৮, চক্ষু বিভাগ, ৯, চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগ, ১০, ষ্টোর ১১, প্যাথলজি, রেডিওলোজী ও ইমেজিং বিভাগ, ১২, জরুরী বিভাগ, ১৩, বহির্বিভাগ ১৪, আবাসন সংক্রান্ত ১৫, মর্গ এবং ময়না তদন্ত বিষয়ক, ১৬, মসজিদ বিষয়ক, ১৭, পি ডব্লিউ ডি বিষয়ক, ১৮, হিমোডায়ালাইসিস বিভাগ, ১৯, আই সি ইউ,ও সি সি ইউ বিভাগ, ২০ আইসোলেশান ওয়ার্ড ( কভিড) বিষয়ক, ২১, স্বাস্থ্য শিক্ষা, ২২, প্রশাসন শাখা, ২৩, খাদ্য বিভাগ, ২৪, ভায়া, এ এন সি/ পি এন সি,ডগ বাইট, ডটস্ কর্নার, ও সি সি, মা মনি বিষয়ক, ২৫, বিবিধ।
আগামী সাপ্তাহিক সভা থেকে স্ব-স্ব বিভাগের ইনচার্জ গন নিজস্ব বিভাগের কর্মকাণ্ড ডাটা আকারে উপস্থাপন করবেন। কভিড ওয়ার্ডে রোগী কমে যাওয়ায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত জনবল জেনারেল ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হবে।
চর্ম ও যৌন বিভাগে বেশী রোগী হওয়ায় একজন মেডিকেল অফিসার কে বহির্বিভাগে এ বিভাগের রোগী দেখার জন্য নিদিষ্ট করে দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। শীত শুরু হওয়ার সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিস বিভাগের সাথে যোগাযোগ করে ক্যাম্পাসে একটি অগ্নিনির্বাপন মহড়া করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
ওটি সমুহে স্থানীয় ব্যাবস্থাপনায় নিজস্ব জনবল তৈরি করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে চক্ষু বিভাগের অপারেশন চালু করন। চক্ষু ওটির ইনচার্জ কে যন্ত্রপাতি সমুহের হালনাগাদ তথ্য প্রস্তুত করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। কোন যন্ত্রপাতির অভাব থাকলে তা দ্রুত সমাধান করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।ই. এন. টি ওটির কার্যক্রম সফলভাবে শুরু হয়েছে বিধায় সন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
অর্থো- সার্জারী ওটিতে ওটি বয় এর অভাবে সমস্যা হচ্ছে বিধায় সভাকে অবহিত করা হয়। নিজস্ব ব্যাবস্থাপনায় প্রশিক্ষন দিয়ে জনবল তৈরি করে এ সমস্যার সমাধানের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
জেনারেল সার্জারী ওটিতে জনবলের অভাবে বিদ্যমান তিনটি টেবিলে একই সাথে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে সভায় অবহিত করা হয়। ওটি বয় সহ অন্যান্য জনবল স্থানীয় ব্যাবস্থাপনায় প্রশিক্ষন দিয়ে গড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। ইমার্জেন্সি ওটি সমুহ চলার সময় সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে সু- সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়, যাতে কোন অনাকাক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়।
বহির্বিভাগে সার্জারী, অর্থো- সার্জারী, আই,ই. এন. টি রোগীদের সেবা পাওয়ার সুবিধার্থে মেডিকেল অফিসারদের মধ্যে দায়িত্ব নিদিষ্টকরন করে দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সভা শেষে তত্বাবধায়ক সম্প্রতিক সময়ে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের সেবা প্রদানে ডাক্তার ও নার্স’দের প্রশংসা জ্ঞাপন ও সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
