নীতি-নৈতিকতা শেখাতে ভূমিকা রাখুন শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ফেনীর ডিসি
শহর প্রতিনিধি
ফেনী জেলা প্রশাসক মো: ওয়াহিদুজজামান বলেছেন, অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে শিশুদের হাতে মোবাইল ফোন চলে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে শিশুটি গেমস সহ নানা বিষয়ে আসক্তি হচ্ছে। অথচ তারা পড়াশোনার পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া শিক্ষক রয়েছেন, কিন্তু কোন খেলাধুলা হয়না। চর্চা না থাকায় ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, হ্যান্ডবল, সাঁতার পারেনা। প্রত্যেক ছাত্রকে সাঁতার জানা থাকতে হবে। এতে করে কোন শিক্ষার্থী পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবেনা। ফলে তারা অন্য পথে পা বাড়াচ্ছে। পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাং গড়ে উঠছে।
বুধবার দুপুরে ফেনী ডিস্ট্রিক অনলাইন স্কুলের আয়োজনে অনলাইন ক্লাস/ পরীক্ষার টুলস শীর্ষক প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন। জেলা শিক্ষা অফিসের নির্দেশনায় ও ফেনী জেলা এ্যাম্বাসেডরগণের কারিগরি সহযোগিতায় কর্মশালায় অতিথি ছিলেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সলিম উল্লাহ। এছাড়া জেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম, সোনাগাজী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল আমিন, সদর উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার কামরুন নাহার, জেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ফকির আহমদ ফয়েজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে ধষর্ণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জেলা প্রশাসক বলেন, চাচা-ভাতিজীকে ধর্ষণ করে, বাবার কাছে মেয়েরা নিরাপদ নয়। ফেনীতেও অনেকগুলো ধর্ষণ-বলাৎকারের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু আমরা শুধু বইয়ের পড়া পড়ছি। নীতি-নৈতিকতা না শিখার কারণে সমাজে অধ:পতন হচ্ছে। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।
শিক্ষার্থীদের মানবসম্পদ হিসেবে গড়তে হবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এখন আর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র পাওয়া যায়না। সরকার বড় বড় ভবন করে দিচ্ছে। শিক্ষক বেড়েছে, বেতনও বেড়েছে। তবু কেন জানি শিক্ষার মান নিম্নমুখী। শিক্ষকদের প্রতি ছাত্রদের শ্রদ্ধা-ভক্তি কমে যাচ্ছে। এসব বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।
দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে সদর উপজেলার ৩২, ছাগলনাইয়া উপজেলার ১৮, সোনাগাজী উপজেলার ১০, দাগনভূঞা উপজেলার ১২, পরশুরাম উপজেলার ৮ ও ফুলগাজী উপজেলার ৫ জন শিক্ষক অংশ নেন। ফেনী জেলার ২১ জন এ্যাম্বাসেডর প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সলিম উল্লাহ জানান, করোনাকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় জেলায় ১৩৬টি মাধ্যমিক স্কুল ও মাদরাসায় ৭ হাজার শিক্ষক অনলাইনে নিয়মিত পাঠদান করাচ্ছেন। ফলে অনলাইন স্কুল কার্যক্রমে ফেনী জেলা দেশের ৩য় স্থান অর্জন করেছে। এর মধ্যে রাজবাড়ী প্রথম ও লালমনিরহাট দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।